গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফট দুর্ঘটনায় এক রোগীর স্বজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হলেন কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার মো. জাহিদুল ইসলাম (৪০)। তার সন্তান হাসপাতালের ১০ তলায় শিশু ওয়ার্ডে কয়েকদিন ধরে ভর্তি। সন্তানের চিকিৎসার জন্য তিনি ওই হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে অবস্থান করছিলেন।
নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, জাহিদুল ইসলাম তার সন্তানের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে হাসপাতালের ১০ তলায় শিশু ওয়ার্ডে যান। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিচে নামার জন্য লিফট কল করেন ১০ তলা থেকে। তবে ওই লিফট নষ্ট ছিল, লিফটম্যানও ছিল না। তিনি লিফট কল করলে কিছু সময় পর দরজা খুলে যায়, কিন্তু লিফট আসেনি। তিনি ভেতরে পা দিলে সঙ্গে সঙ্গে নিচে পড়ে যান এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। এসময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার শ্যালিকাসহ অন্য কয়েকজন রোগীর স্বজন অল্পের জন্য রক্ষা পান।
হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আইয়ুব হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরাও এসেছিলাম। পরে লিফটের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। লিফটের সমস্যা এটা সবাইকে সর্তক করা উচিত ছিল আগে থেকে। এই লিফট গত কয়েকদিন ধরে সমস্যা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং কাউকে সর্তকও করেনি। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও লিফটম্যান উভয় দায়ী।
শিশু ওয়ার্ডে তাদের পাশের বেডে থাকা রোগীর স্বজন আকাশ আহমেদ বলেন, আমি আর জাহিদ ভাই পাশাপাশি বেডে কয়েকদিন হলো রয়েছি। আমি চা খেয়ে ফেরার পথে শুনি তিনি নিচে পড়ে গেছেন। আমরা সবাই দৌড়ে নিচে এসে বলি একজন পড়ে গেছে। সেখানে কোনো লিফটম্যান ছিল না। ডেকে এনে খুলে তারপর তাকে বের করি। এরমধ্যেই জাহিদ ভাই মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, এই লিফটগুলোর সমস্যা কয়েকদিন ধরেই। নানা সমস্যা দিচ্ছিল, কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেয়নি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মঞ্জুর মোর্শের বলেন, আমরা শুনতে পাই লিফটে একজন পড়ে গেছে। পরে লোকজন একজনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসেন। লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
তাজউদ্দীন হাসপাতালের পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, লিফট থেকে পড়ে একজন মারা গেছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা জানতে পেরেছি লিফট সচল ছিল না, কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তদন্ত করে দেখা হবে।
এর আগে চলতি বছরের ১২ মে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ (৫০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়।
এছাড়া ৩ মে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী হাসপাতালের ১২ তলায় লিফটের পাশের একটি ফাঁকা দিয়ে পড়ে পড়ে গিয়ে জিল্লুর রহমান (৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়।