শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪ । ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সজীব ওয়াজেদ জয়—এর শুভ জন্মদিন পালিত

অনলাইন ডেস্ক »

সেবা, শান্তি, প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়—এর শুভ জন্মদিন ২৭ জুলাই ২০২১ইং তারিখ নানা আয়োজনে সারা দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রাম ও সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ২৮ বছরে পদার্পণ করেছে সংগঠনটি। দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ৬টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটি। সকাল ৯টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বিকাল ৪.৩০ মিনিটে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ অডিটোরিয়ামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাচুর্য়ালী সম্পৃক্ত হয়ে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ প্রদান করেন বিশ^ মানবতার জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা যখন আহবান করেছি, আমরা দেখেছি এই দুঃসময়ে দুর্গত মানুষের পাশে একমাত্র আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাই পাশে আছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা দেখি আমাদের প্রতিটি সহযোগী সংগঠন ব্যাপকভাবে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আরও অনেক দল আছে বাংলাদেশে, দলের তো অভাব নেই! কিন্তু তারা নাকি মানুষকে সাহায্য করে, আমরা টেলিভিশনে মাঝে মাঝে শুনি বা দেখি। কিন্তু দৃশ্যমান মানুষের পাশে দাঁড়ানো বা তাদেরকে প্রকৃতভাবে সহযোগিতা করা। একটা তো ফটোসেশন হয়, সেটা এক জিনিস, আরেকটা হলো সত্যিকারভাবে মানুষের জন্য কাজ করা, সেটা আমাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগ করে যাচ্ছে। সেজন্য আমি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একেবারে রোগীদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে অক্সিজেন সিলিন্ডার দেওয়া বা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দেওয়া বা দূগর্ত মানুষের খাদ্য সাহায্য করা, মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মাস্ক দেওয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেওয়া থেকে শুরু করে, এমন কোন জায়গা নেই, এমনকি লাশ দাফন কাপন সব ব্যবস্থাতেই আমি দেখি স্বেচ্ছাসেবক লীগ অত্যন্ত চমৎকারভাবে সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে পরিবেশ প্রকৃতি রক্ষার জন্য বৃক্ষরোপনের যখন ঘোষণা দিলাম সেই বৃক্ষরোপনেও যেমন তারা ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপন করছে। সেটা কিন্তু আমাদের এখনও করতে হবে। এই আষাঢ় শ্রাবণ মাস এখনই গাছ লাগানোর সময়, এখন বৃক্ষরোপন করতে হবে। কারণ আমাদের বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষার জন্য এটা একান্তভাবে জরুরী। এছাড়া যারা গাছ লাগাবেন তাদের জন্য লাভ হয়। সেই সাথে একটা দেশের মানুষের সেবা করার জন্য যে যে কাজ করা দরকার। আমাদের এই সংগঠনটি আন্তরিকতার সাথে করে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের যত অনুষ্ঠান, যা কিছু হয় সব সময়, আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবক লীগ সবসময় তাদের দায়িত্ব পালন করে। আমাদের কনফারেন্স থেকে শুরু করে সব কিছুতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সেজন্য সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সমস্ত সদস্যদেরকে বলব, আমি মনে করি আমাদের প্রত্যেকটি কাজে যেভাবে স্বেচ্ছাসেবক লীগ দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, এটা একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং এটা আমি বলব যে, তোমাদের আরও প্রচার হওয়া দরকার ব্যাপকভাবে। শুধু আমাদের দেশের ভিতরেই না বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বা বিভিন্ন জায়গায় এটা প্রচার হওয়া দরকার। কারণ পৃথিবীতে খুব কম দেশ আছে যেখানে এইভাবে দলের নেতাকর্মী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সাহায্য করে। সেটা বাংলাদেশে আমরা করছি। বিশেষ করে আমাদের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলি যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। করোনা ভাইরাসে আমি বলব আমাদের সকলকে নিজের একটু সুরক্ষিত থাকা দরকার, আর ইতিমধ্যে আমরা আমাদের ভ্যাকসিনের ব্যাপারে যেখানে যা পাওয়া যাচ্ছে, আমরা ক্রয় করছি। তার জন্য আলাদা টাকাও রাখা আছে, প্রয়োজনে আরও টাকা আমরা খরচ করব। কিন্তু বাংলাদেশে অন্তত ৮০ ভাগ মানুষ বা অথার্ৎ যারা ভ্যাকসিন নিতে পারে ডঐঙ এর নির্দেশ মোতাবেক তারা সবাই যাতে ভ্যাকসিন নিতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আর ইতিমধ্যেই আমাদের প্রায় ১ কোটি ৮৭ লক্ষের কাছাকাছি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গেছে। আর সেই সাথে আমরা আরও ভ্যাকসিন দেওয়াচ্ছি এবং একেবারে গ্রাম পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেখানে সবাইকে শুধু রেজিস্ট্রেশন করতে হবে তা না, তাদের আইডি কার্ড দিয়ে তারা সরাসরি এসে রেজিস্ট্রেশন করে ওখানেই নিতে পারবে। সেই ব্যবস্থা ও আমরা করে দিচ্ছি। এই ক্ষেত্রে আমি বলব স্বেচ্ছাসেবক লীগের ছেলে মেয়ে যে যেখানেই থাকুক মানুষকে একটু সহযোগিতা করা সাহায্য করা সেটা তোমরা অতীতেও করেছো, এটাও করবা, যেন সবাই এই ভ্যাকসিনটা নিতে পারে। কারণ মানুষের মধ্যে একটা আতংক ছিল, ভয় ছিল টিকা নিলে কি হবে টিকা নিলে অনেক কিছু হয়ে যাবে নানা রকমের একটা ভীতি ছিল। এখন সবাই আস্তে আস্তে সেই ভীতি কাটাচ্ছে। একটা সমস্যা এখনও আছে যেটা আমি গ্রামের লোক থেকে খবর পাই। কেউ পরীক্ষা করতে চায় না! টেস্ট করতে চায় না! তাদের ধারণা টেস্ট করলে করোনা আছে সেটা শুনলে সে অসুস্থ হয়ে যাবে, কেউ তার সাথে মিশবে না, এই ভয়ে করে না। কিন্তু এটা ঠিক নয়। টেস্ট করলে তার যে চিকিৎসাটা হবে, সে যে ভাল হবে বা সে অন্য কাউকে সংক্রমিত করবে না, সে নিজে বাঁচবে, অন্যকে বাঁচাবে, এই ধারণাটা মানুষের মধ্যে দিতে হবে। আমাদের যত কর্মী আছে সবাইকে বলে দেওয়া, সাধারণ মানুষের মধ্যে এ বার্তাটা পেঁৗছে দেওয়া, আর তাছাড়া এখন আমরা যদি ভ্যাকসিন দিয়ে দিতে পারি তাহলে তো আর কোন চিন্তা নেই। সেটা হলেও বেশি ক্ষতি হবে না, সেভাবে আমার মনে হয় তোমরা যেভাবে মানবতার সেবা, দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছ এটা অব্যাহত রাখ। এটাই মনে রাখবে, যে এটাই হচ্ছে আমাদের আর্দশ, এটাই হল আমাদের জাতির পিতা শিখিয়েছেন। কাজেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তোমাদের সবাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জননেতা কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা স্বেচ্ছাসেবকদের আইডল। তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয় দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে স্বেচ্ছাসেবার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সজিব ওয়াজেদ জয় দেশকে এনালগ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করেছেন। তাঁর দেখানো পথে আজ নতুন প্রজন্ম স্বপ্নের বুনিয়াদ দেখছেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।

এ সময় “স্বেচ্ছাসেবার ১ বছর” ২০১৯—২০২০ইং শিরোনামে প্রকাশিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। গ্রন্থটির সার্বিক পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিগত ১ বছরের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম নিয়ে ৫ মিনিট ৩১ সে. এর একটি ডকুমেন্টারী প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে জনাব সজিব ওয়াজেদ জয় এর ৫১তম শুভ জন্মদিন ও সংগঠনের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন জননেতা কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল আউয়াল শামীম, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ নেতৃবৃন্দ।

আপনার মন্তব্যটি লিখুন
শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »