শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপণন ব্যবস্থাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। কলকারখানাগুলোর সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে, প্রতিষ্ঠান লোকসান কমিয়ে, লাভজনক করতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে বিশ্বের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সামগ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করতে হবে। প্রকল্প পরিচালকরা স্ব স্ব প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করে কাজের সুপারভিশন ও মনিটরিং বাড়াতে হবে। প্রকল্প এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে মনিটরিং বাড়াতে হবে। তিনি কারখানাগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধি ও উন্নয়নে যুগোপযোগী প্রকল্প গ্রহণ করতে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য, গুণগত এবং মানসম্মত করার পরামর্শ দেন।
গতকাল গাজীপুর জেলায় অবস্থিত শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) কারখানাগুলো পরিদর্শন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শিল্প সচিব এ সব নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় বিএসইসির চেয়ারম্যান মো. রইছ উদ্দিন, বিএসইসির পরিচালক (অর্থ) মো. মনিরুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. আল আমিন সরকার, উপসচিব মো. মোকলেছুর রহমান আকন্দসহ বিএসইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এটলাস বাংলাদেশ লি. এর পরিদর্শনকালে শিল্প সচিব বলেন, অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২১-এর আলোকে আমাদের মোটরসাইকেল উৎপাদনে যেতে হবে। মোটরসাইকেলের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিক্রি বাড়াতে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টিকালে মার্কেটিংয়ের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। তিনি এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডকে বাইসাইকেল ও ফ্যান উৎপাদন যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের বিষয় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন।
ন্যাশনাল টিউবস লি.-এর পরিদর্শন ও কর্মকর্তাদের মতবিনিময়কালে শিল্প সচিব বলেন, গ্রাহকের পছন্দ ও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন পণ্যে উৎপাদন করতে হবে এবং উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিএসইসির আওতাধীন প্রতিষ্ঠান-শিল্পকারখানার উৎপাদিত পণ্যের গুণগত বৈশিষ্ট্য-সংবলিত বিজ্ঞাপন বাড়াতে হবে। এছাড়া পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্যও আনতে হবে। সর্বোপরি নিজেদেন সক্ষমতা বাড়িয়ে আরও উৎপাদন বাড়াতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প বিএসইসি রাসায়নিক গুদাম প্রকল্প পরিদর্শন করে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য বলেন, যে সব রাসায়নিক গুদাম ইতোমধ্যে নির্মাণ শেষ হয়েছে, সেগুলো দ্রুততম সময়ে মধ্যে ব্যবহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশি সংখ্যাক জনবল নিয়োগ করে প্রকল্পের বাদ বাকি কাজ নির্ধারিত সময়ে মধ্যে কাজ শেষ করতে তিনি নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লি. পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ব্লেড উৎপাদনে প্রোডাকশন লস কমিয়ে প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক অবস্থানে উন্নতি করতে হবে। ঘন ঘন প্রকল্পের কাজের সময় বৃদ্ধি করা যাবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে। ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস লি. এর পরিদর্শনের সময় শিল্প সচিব কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য বলেন, নিজেদের মেধা মনন ও উদ্ভাবনী মনোভাব দিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে কাজ করতে হবে। শিল্প সচিব গাজীপুর জেলায় অবস্থিত এটলাস বাংলাদেশ লি., বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লি., ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস লি., ন্যাশনাল টিউবস লি. এবং বিএসইসি রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি তিনটি কারখানায় (এটলাস বাংলাদেশ লি., ন্যাশনাল টিউবস লি.ও ঢাকা স্টিল ওয়ার্কস লিমিটেডে) বৃক্ষরোপণ করেন।